বিশেষ প্রতিবেদক
বিশেষ শর্তে কারামুক্তি ও করোনা পরিস্থিতির কারণে এবার ঈদেও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সাক্ষাৎ পান না দলীয় কর্মীরা। সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি প্রধান হিসেবে তিনি প্রতি বছর ঈদ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সকল শ্রেণি পেশার মানুষের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইং সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, গত ঈদুল ফিতরে স্থায়ী কমিটির নেতাদের সঙ্গে ম্যাডামের সাক্ষাৎ হয়েছে। এবারে এখনও এ ধরনের কোনো সিডিউল চূড়ান্ত হয়নি। সিনিয়র নেতারা হয়তো দেখা করতে পারবেন, তবে কর্মীদের ব্যাপারে প্রশ্নই ওঠে না। সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হলে জানতে পারবেন।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাজা হওয়ার পর থেকে ২৫ মাস কারাগারে ও কারা হেফাজতে হাসপাতালে কাটে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার। সে কারণে ২০১৮ সালের ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহায় দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়ের সুযোগ হয়নি তার। যা তিনি বহু বছর ধরে করে আসছিলেন। এরপর ২০১৯ সালেও একইভাবে কারাগারে থাকার কারণে দুটি ঈদ কাটে শুভেচ্ছা বিনিময় না করেই।
২০২০ সালের ২৫ মার্চ প্রধানমন্ত্রীর নির্বাহী আদেশে ৬ মাসের জন্য সাজা স্থগিত করা হয় খালেদা জিয়ার। মুক্তি পেয়ে গুলশানের বাসায় ওঠেন তিনি। সরকারের পক্ষ থেকে শর্ত দেয়া হয় নিজ বাসায় থাকতে হবে। বিদেশে যেতে পারবেন না, একই সঙ্গে চিকিৎসা নিতে হবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ( বিএসএমএমইউ)। ফলে গত চার মাস তিনি বাসায়ই অবস্থান করছেন।
এরমধ্যে ঈদুল ফিতর কেটে গেছে। এর মধ্যে শুধু তার চিকিৎসক ডা. এজেড এম জাহিদ হোসেন ও ডা. মামুন তার সাক্ষাৎ পেয়েছেন। তারা মূলত তার চিকিৎসার জন্যই বাসায় যাওয়া আসা করেন। এছাড়া তার ভাই শামীম ইস্কান্দার, বোন সেলিমা ইসলাম ও ভাই-বোনের পরিবারের সদস্যরাই শুধু সাক্ষাৎ পেয়েছেন খালেদা জিয়ার।
মুক্তি পাওয়ার টানা ৪৮ দিন পর প্রথম সাক্ষাৎ পান দলীয় মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গত ১২ মে ও ১৪ জুন দুই দফায় খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করেন মির্জা ফখরুল। এছাড়া খালেদা জিয়ার বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস কয়েকবার সাক্ষাৎ করেছেন খালেদা জিয়ার সঙ্গে। একবার সাক্ষাৎ পেয়েছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসক ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে এবারের ঈদেও দলীয় চেয়ারপারসনের সঙ্গে (খালেদা জিয়া) নেতাকর্মীদের সাক্ষাতের কোনো সুযোগ হচ্ছে না।
তিনি বলেন, গত ঈদুল ফিতরের দিন যেভাবে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঘরোয়া পরিবেশে ঈদ উদযাপন করেছেন, এবারও একইভাবে ঈদের দিন পার করবেন খালেদা জিয়া।