বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
নিজস্ব প্রতিবেদক ::
শুক্রবার (২ অক্টোবর) গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সরকারের দুর্বল পররাষ্ট্র নীতির কারণে সীমান্তে মিয়ানমারের সেনা সমাবেশ ঘটিয়েছে বলে দাবি করেছেন। এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে তা রুখতে ‘আন্ত:আঞ্চলিক কূটনৈতিক’ উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে সরকারের সমালোচনা করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, সরকারের দুর্বল পররাষ্ট্র নীতি আজ মিয়ানমারের কাছে স্পষ্ট। এর পরিপূর্ণ সুযোগ গ্রহণ করেই মূলত মিয়ানমার সেনাবাহিনী সম্পূর্ণ অযাচিত ও উদ্দেশ্যমূলকভাবে বাংলাদেশ-মিয়ানমার আন্তর্জাতিক সীমান্তে সেনা সমাবেশ করার দুঃসাহস দেখাচ্ছে। এই অপতৎপরতা রুখতে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিতে হবে।
রোহিঙ্গা সংকট সমাধান না হওয়ার পেছনে সরকারের নতজানু পররাষ্ট্র নীতি দায়ী অভিযোগ করি বিএনপির মহাসচিব বলেন, প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে যে ধরনের সমন্বিত বহুমুখী তৎপরতা নেওয়া দরকার ছিল, সরকার তা নিতে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে। তিনি বলেন, ‘এই সমস্যার সমাধানে বৈশ্বিক, আঞ্চলিক ও দ্বিপক্ষীয় সব স্তরেই আমরা ব্যর্থ হচ্ছি। সরকারের নতজানু পররাষ্ট্র নীতির সুযোগে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধান আজকে কঠিন থেকে কঠিনতর হচ্ছে। সরকার বন্ধুদেশগুলোকেও পক্ষে নিয়ে আসতে ব্যর্থ হয়েছে।’
রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে সরকার ব্যর্থ দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, ভারত-চীন সীমান্তে সৈন্য সমাবেশ নিয়ে সারা বিশ্বে তোলপাড় হয়ে গেছে। কিন্তু মিয়ানমার সৈন্য সমাবেশ করছে। কিন্তু সরকারের কোনো কথা নেই। তারা একবারে চুপচাপ থেকে নিরাপত্তা পরিষদে একটি চিঠি দিয়েছে। এখন পর্যন্ত কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি।
মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘রোহিঙ্গারা বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে নিপীড়িত জনগোষ্ঠী। বিশ্বের মানচিত্রে এই জনগোষ্ঠীকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে অবশ্যই আন্তর্জাতিক ব্যবস্থাপনায় বেসামরিক তদারকিতে মিয়ানমারের রাখাইন অঞ্চলকে একটি নিরাপদ অঞ্চল হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সরকার দ্বিপক্ষীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক উদ্যোগকে এক সুতোয় বাঁধতে পারলেই এটা সম্ভব হবে।’
ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ করে দেওয়ার উদ্যোগের সমালোচনা করেন বিএনপির মহাসচিব। তিনি বলেন, ‘এটা একটা আন্তর্জাতিক চক্রান্ত বলে আমরা মনে করি। রোহিঙ্গা সমস্যা অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে জাতিসংঘে তুলতে হবে। নতুবা এটা বাংলাদেশের জন্য একটা ভয়ানক বিপর্যয় নিয়ে আসবে।’