প্রয়াত জাতীয় নেতা বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ-এর জানাজার ছবি
নোয়াখালী ও কবিরহাট (নোয়াখালী) প্রতিনিধি ।।
বরেণ্য রাজনীতিবিদ জাতীয় নেতা বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য, সাবেক উপ-রাষ্টপতি ও প্রধানমন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ কোম্পানীগঞ্জে মোহাম্মদপুর গ্রামে তাঁর বাবা-মায়ের কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত হয়েছেন। শুক্রবার (১৯ মার্চ) বিকাল সাড়ে ৫টায় মোহাম্মদনগরস্থ (মানিকপুর) নিজ বাড়ির সামনে ষষ্ঠ জানাযার নামাজ শেষে পারিবারিক কবরস্থানে বাবা মাওলানা মমতাজ উদ্দিন আহমেদ ও মা বেগম আম্বিয়া খাতুনের কবরের পাশে তাঁকে দাফন করা হয়।
প্রয়াত জাতীয় নেতা বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদের প্রথম জানাজা হয় সিঙ্গাপুরে (১৮ মার্চ) পরে শুক্রবার (১৯ মার্চ) সকাল ১০টায় সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গনে ২য় জানাজা, ঢাকার নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্যালয়ের সামনে ৩য় জানাজার পর মরহুমের লাশ নিয়ে সা হয়নিজ জন্মস্থান ও নির্বাচনী এলাকা নোয়াখালীতে। নোয়াখালীর কবিরহাটে ৪র্থ জানাজার পর বসুরহাটৈ ৫ম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
এর আগে ঢাকার আনুষ্ঠানিকতা শেষে হেলিকপ্টার যোগে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদের মরদেহ নোয়াখালীর কবিরহাট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে নিয়ে আসা হয়। বাদ জুম্মা কবিরহাট সরকারি কলেজ মাঠে চতুর্থ জানাযার নামাজ শেষে তাঁর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় বসুরহাটে। বসুরহাট সরকারি মুজিব কলেজ মাঠে বিকেল ৪ টায় পঞ্চম জানাযার নামাজ পড়ানো হয়। নোয়াখালীর কোম্পানিগঞ্জে প্রয়াত মওদুদের জানাযায় জনতার ঢল নামে।
কবিরহাটের জানাজায় কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মো.শাহজাহান, কেন্দ্রীয় বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য তাবিথ আউয়াল, আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেন, জেলা বিএনপির সভাপতি গোলাম হায়দার বিএসসি, সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আবদুর রহমান, কবিরহাট উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবদুর রহিম, সাধারণ সম্পাদ লিটন চৌধুরী, কবিরহাট পৌরসভা বিএনপির সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান মঞ্জুসহ দলীয় নেতাকর্মী ও সর্বস্তরের জনগণ অংশ নেন।
এসময় নোয়াখালী-৪ আসনের সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধরী,কবিরহাট পৌরসভার মেয়র জহিরুল হক রায়হানসহ আওয়ামলীগসহ সর্বস্তরের মনুষ মরহুমকে শেষ দেখা ও শ্রদ্ধা জানান।
পরে কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাটের জানাজায় কেন্দ্রীয় বিএনপি ও জেলা বিএনপির নেতারা ছাড়াও, বসুরহাট পৌরসভার আলোচিত মেয়র আবদুল কাদের মির্জা, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন বক্তব্য ও শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এসময় কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল হাই সেলিম, সাধারণ সম্পাদক নূরুল আলম সিকদার, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপি মনোনিত সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী হুমায়ূন কবীর পলাশসহ কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির প্রস্তাবিত সভাপতি সাবেক মেয়র কামাল চৌধুরী, প্রস্তাবিত সেক্রেটারী মাহমুদুর রহমান রিপনসহ দলীয় নেতাকর্মী ও সর্বস্তরের জনগণ অংশ নেন।
পারিবারিক সুত্রে জানা গেছে, মৃত্যুর আগে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ বাবা-মায়ের কবরের পাশে সমাহিত হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে গেছেন। তার ইচ্ছা অনুযায়ী পরিবারের পক্ষ থেকে সেই ব্যবস্থা করা হয়েছে।
গত ১৬ মার্চ মওদুদ আহমেদের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে সারাদেশের পাশাপাশি তাঁর নির্বাচনী এলাকা নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ-কবিরহাটের মানুষের মাঝে শোকাহত পরিবেশ সৃষ্টি হয়। অনেকে ফেসবুকে আবেগঘন স্ট্যাটাস নিয়ে তাঁর রুহের মাগফেরাত কামনা করেন। প্রিয় নেতার মৃত্যু স্তব্ধ করে দিয়েছে কোম্পানীগঞ্জবাসীকে। নোয়াখালী-৫ (কোম্পানীগঞ্জ-কবিরহাট) আসন থেকেই ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ পাঁচ বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।
মঙ্গলবার (১৬ মার্চ) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। ৮১ বছর বয়সী মওদুদ কিডনি ও ফুসফুসের জটিলতাসহ বিভিন্ন সমস্যায় ভুগছিলেন। গত ১ ফেব্রুয়ারি থেকে তিনি সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ ১৯৪০ সালের ২৪ মে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার মোহাম্মদনগর (মানিকপুর) গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মাওলানা মমতাজ উদ্দিন আহমেদ এবং মা বেগম আম্বিয়া খাতুন। ছয় ভাই-বোনের মধ্যে মওদুদ আহমেদ চতুর্থ।
এলাকার জানাজার পূর্বে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদের সহধর্মনী হাসনা জসীম উদ্দীন মওদুদ মরহুমের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনায় সকলের কাছে দোয়া চেয়ে বক্তব্য দেন ।