ভাস্কর্য উচিলা মাত্র, টার্গেট উগ্র মৌলবাদীদের ক্ষমতা

00.jpg

ছবি ফেইসবুক থেকে সংগৃহিত।

সীমান্ত চৌধুরী ::

স্বাধীনতাবিরোধীরাই আবার বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। ভাস্কর্য আর মূর্তি এক নয়। ভাস্কর্য হলো আমাদের কৃষ্টি কালচার আর ইতিহাস-ঐতিহ্যে ধারক। আর মূর্তি হলো হিন্দুদের পুজারী। একটা জাতীয় সংস্কৃতি অন্যটা ধর্মীয় পুজনীয় বিষয়।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য নিয়ে কেনো ষড়যন্ত্রই হচ্ছে। এটি পরিকল্পিত একটি রাজনৈতিক এজেন্ডা। ধর্মের নামে রাজনৈতিক ধর্ম ব্যবসায়ীদের নতুন নতুন ফতুয়া তৈরি করে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করতে চায় তাদের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের পক্ষের সকলকে রুখে দাঁড়াতে হবে।

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, বাঙালির হাজার বছরে শ্রেষ্ঠ সন্তান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সম্মান ও মর্যাদা সমুন্নত রাখতে প্রয়োজনে বাঙালির জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী সকলকে শক্তিকে স্বাধীনতাবিরোধী মৌলবাদীদের উৎখাতে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তালা।

এ উপমহাদেশে ইংরেজরা আসার পর কেউ কেউ ইংরেজি শিক্ষা হারাম বলে ফতোয়া দিয়েছিল, টেলিভিশন চালু হলে তা দেখা হারাম এবং হজে যাওয়ার জন্য ছবি তোলাও হারাম বলে বিভ্রান্তি ছড়ানো হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের সময় ফতোয়া দেয়া হলো যে, যারা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে লড়াই করছে তারা সবাই কাফের। সেই ধারাবাহিকতাতেই তাদেরই প্রেতাত্মারাই কিন্তু আজকে ভাস্কর্য নিয়ে প্রশ্ন তুলছে, বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরাজিত শক্তি, সাম্প্রদায়িক, উগ্র মৌলবাদী গোষ্ঠী কর্তৃক কুষ্টিয়া শহরের পাঁচ রাস্তার মোড়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্মাণাধীন ভাস্কর্য ভাঙচুরের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে এবং জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক।

আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের সাতজন বীরশ্রেষ্ঠ এর মধ্যে একজনও মোল্লা নাই, আটষট্টি জন বীরউত্তমের মধ্যে একজনও মাওলানা নাই, ১৭৫ জন বীরবিক্রমের মধ্যে একজন মুফতি নাই, ৪২৬ জন বীরপ্রতীকের মধ্যে একজনও আন্তর্জাতিক খ্যাতি-সম্পন্ন মুফাচ্ছের নাই, তবে দুইজন মহিলা আছেন।

দেশ কে স্বাধীন করতে কত ধরণের মুক্তি বাহিনী গঠিত হয়েছে। কিন্তু একজন মৌলভীর নেতৃত্ব ৫-১০ জন মাদ্রাসার ছাত্র নিয়ে কোন প্রতিরোধ যুদ্ধের নজির পাওয়া যায়নি। তবে নজির আছে পাকিস্তানি কর্তৃক বাংলার মা বোনদের ধর্ষণে সহযোগিতার।

অথচ ১১ বছরের শহীদুল যুদ্ধ করেছে, উপজাতিরা যুদ্ধ করেছে, তারামন বিবিরা যুদ্ধ করেছে, বিদেশিরা যুদ্ধ করেছে। তখন তারা চিল্ল্ইায়া দাবি করেছিলো মুসলমানের দেশ পেয়ারে পাকিস্তানই থাকবে। তখন পেয়ারে পাকিস্তানের জন্য দরদ দেখালেও এখন দেশ প্রেম উচলাইয়া পড়ছে।
আজ আমাদের মোল্লাগণ মাইকে চিল্লাইয়া দেশপ্রেমের বুলি আওড়াচ্ছেন। অথচ তারাই তালেবান কর্তৃক মসজিদে/ স্কুলে আত্মঘাতী হামলায় নিরীহ মুসলিম/শিশু হত্যাকে সমর্থন করে। মাদ্রাসায় আমাদের শিশুরা যখন বলৎকার হয় তখন চিল্লায় না।

দেশের স্বাথীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষায় উগ্রমৌলবাদের বিরুদ্ধে আরেকটা যুদ্ধ চাই। যে যুদ্ধ হবে আমার বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও অস্তিত্বকে সাম্প্রদায়িকতার কালো থাবা থেকে সুরক্ষিত রাখার। যে যুদ্ধ হবে ধর্মের ব্যবসা করে রাজনৈতিক ফায়দা লুটেরাদের বিরুদ্ধে। অনেক হয়েছে,আর কিসের অপেক্ষা! চল যায় যুদ্ধে, একাত্তরের রেখে যাওয়া কুলাঙ্গারদের বিরুদ্ধে।

scroll to top