ওবায়দুল কাদের। ফাইল ছবি ।
নিজস্ব প্রতিবেদক ::
কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের অবমাননা ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, ‘এখনো দলের কর্মীদের নিয়ন্ত্রণে রেখেছি। আবারও বাড়াবাড়ি করলে আওয়ামী লীগের কর্মীরা ঘরে বসে থাকবে না।’
রোববার (৭ ডিসেম্বর) নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি তাঁর ঢাকার সরকারি বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সভায় যুক্ত হন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, জাতির পিতার প্রতিকৃতি প্রদর্শন ও সংরক্ষণ সাংবিধানিকভাবেই বিধিবদ্ধ বিষয়। তাই বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের অবমাননা প্রকারান্তরে সংবিধানের অবমাননা। এতে যারাই জড়িত, সেই অপরাধীদের শাস্তি পেতেই হবে। পবিত্র সংবিধান ও দেশের আইনপরিপন্থী কোনো ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য, মন্তব্য ও আচরণ বরদাশত করা হবে না।
ইতিহাসের মীমাংসিত বিষয় নিয়ে একটি উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী দেশব্যাপী ধর্মীয় বিভেদ তৈরির অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে বলে মন্তব্য করেন সেতুমন্ত্রী। তিনি বলেন, এ দেশ ও জাতির শ্রেষ্ঠ অর্জন স্বাধীনতার স্থপতি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্যের অবমাননা দেশের চেতনার মর্মমূলে আঘাত হানা। দেশের লাখ লাখ সাধারণ মানুষ এতে ক্ষুব্ধ।
ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আওয়ামী লীগ গায়ে পড়ে আক্রমণ করে না। তবে আক্রমণের শিকার হলে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে একবিন্দুও পিছপা হয় না। উগ্রবাদী গোষ্ঠীকে হুঁশিয়ার করে দিয়ে তিনি বলেন, ‘অনেক হয়েছে। এবার থামুন।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, বঙ্গবন্ধু মানে এ দেশের অস্তিত্ব, স্বাধীনতা। বঙ্গবন্ধু মানে দেশ ও সংবিধান। বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের অবমাননা মানে দেশের মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে আক্রান্ত করা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যানটিনের সামনের অর্ধশতকের স্মৃতি মধুদার ভাস্কর্যের অংশবিশেষ ভাঙচুরের তীব্র নিন্দা জানান আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, ‘ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে দেবেন না।’
কোনো নির্দিষ্ট গোষ্ঠী বা সম্প্রদায়ের স্বার্থের কাছে স্বাধীনতা জিম্মি হতে দেবেন না জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, মুসলিম, হিন্দু, খ্রিষ্টান—সবার মিলিত রক্তের স্রোতোধারায় অর্জিত হয়েছে বাংলাদেশের স্বাধীনতা। মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তিকে সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিয়েও কথা বলেন। তিনি বলেন, নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের দুই শীর্ষ নেতা দুই মেরুতে অবস্থান করায় তাঁদের দলের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তবে তাঁরা এখনো দলের নেতা। তবে আওয়ামী লীগ এখনো এতটা বিপদে পড়েনি যে যখন-তখন যাঁকে-তাঁকে দলে নিয়ে দল ভারী করতে হবে।