নোয়াখালী প্রতিনিধি::
সব পর্যায়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ স্থগিত রাখার বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ প্রত্যাহারের দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) শিক্ষকরা।
নোবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. নেওয়াজ মোহাম্মদ বাহাদুর ও সাধারণ সম্পাদক মজনুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বৃহস্পতিবার (১ অক্টোবর) ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দেয়া হয়। এছাড়াও ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন নোবিপ্রবির সহকারী পরিচালক (তথ্য ও জনসংযোগ) ইফতেখার হোসাইন।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬০ জন শিক্ষক অস্থায়ী পদে নিয়োগপ্রাপ্ত রয়েছেন। ইতোমধ্যে অনেক শিক্ষকের পরবর্তী পদে পদোন্নতির সময়ও প্রায় এক বছর অতিক্রান্ত হয়েছে। তাদের পরে স্থায়ী পদে নিযুক্ত শিক্ষকরাও পদোন্নতি পেয়ে যাওয়ায় শিক্ষকদের মাঝে এক ধরনের বৈষম্য দেখা যাচ্ছে। এছাড়াও অনেকগুলো বিভাগে পর্যাপ্ত শিক্ষক নেই, মাত্র দু’জন শিক্ষক দিয়ে দু’টি শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম চলছে। ফলে মানসম্মত শিক্ষা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না, এতে শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। নতুন নিয়োগ বন্ধ থাকায় বিভাগ পরিচালনায় পর্যাপ্ত শিক্ষক নেই বলে অনেক বিভাগের শিক্ষক উচ্চশিক্ষার জন্য ছুটিতেও যেতে পারছেন না। এতে করে শিক্ষকদের মাঝে উচ্চশিক্ষার ব্যপারে একধরনের অনিশ্চয়তা পরিলক্ষিত হচ্ছে।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, শিক্ষক সমিতি সর্বশেষ গত ২০ সেপ্টেম্বর মানববন্ধন করে ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সমস্যার সমাধানের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে সময়সীমা বেধে দেয়। ভিসি শিক্ষামন্ত্রী ও শিক্ষা সচিবের সঙ্গে আলোচনা করে আমাদের বারবার আশ্বাস দিলেও প্রদত্ত সময়ের মাঝে কোনো ফলাফল পাওয়া যায়নি। ফলে আমরা শিক্ষক সমিতি অস্থায়ী শিক্ষকদের দাবির প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল প্রকার শিক্ষা কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। শিক্ষক সমিতির দাবি শিক্ষা মন্ত্রণালয় দ্রুত এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে শিক্ষা কার্যক্রম পুনরায় চালু করার বিষয়ে সহায়তা করবে।
উল্লেখ্য, সাবেক ভিসির অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে ২০১৯ সালের ২৮ এপ্রিল নোবিপ্রবির সব পর্যায়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ স্থগিত রাখার নির্দেশ দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সেই স্থগিত আদেশের দেড় বছর পেরিয়ে গেলেও মন্ত্রণালয় এখনো আদেশ তুলে নেয়নি। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে শিক্ষক ও কর্মকর্তা সঙ্কট চললেও নতুন করে নিয়োগ দিতে পারছে না বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।