সাংবাদিক ফরিদুল মোস্তফা ও তার পরিবারে সুখের সংসারে ওসি প্রদীপের ভয়াল থাবা!

sangbadik-2.jpg

ছবি: সংগৃহীত।

বিশেষ প্রতিবেদক :

কক্সবাজারের টেকনাফের স্থানীয় সাংবাদিক ফরিদুল মোস্তফা ও তার পরিবারে কক্সবাজারের টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাস ও কক্সবাজারের এসপি মাসুদ হোসেনের রোষানলে সর্বনাশ নেমে এসেছে। এসপি ও ওসির যোগসাজশে টেকনাফ থানায় ৩টি মাদক মামলা এবং কক্সবাজার সদর থানায় আরো ৩টি মাদক ও অস্ত্র মামলার আসামি হয়েছেন সাংবাদিক ফরিদুল মোস্তফা। টেকনাফে মামলার পর ক্ষান্ত হয়নি পুলিশ। ফরিদুলকে পুলিশ ঢাকা থেকে বিনা ওয়ারেন্টে আটক করে কক্সবাজার সদর থানায় মামলা সাজিয়ে আসামি করে বলে অভিযোগ তার পরিবারের সদস্যদের।

সাংবাদিক ফরিদুল মোস্তফার পরিবার ও টেকনাফের সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাস

সাংবাদিক ফরিদুল মোস্তফার স্ত্রী হাসিনা মোস্তফা মিডিয়াকে জানান, এসপির নির্দেশে ওসি প্রদীপের নেতৃত্বে আমার স্বামীকে বিনা দোষে আটক করে প্রথমে ১০ লাখ টাকা দাবি করে পুলিশ। আমার স্বামী এসপি ও ওসির বিরুদ্ধে মাদক সংশ্লিষ্ট, গ্রেফতার বাণিজ্য ও অনিয়মের সাংবাদ পত্রিকায় প্রকাশ করেন। এতেই ক্ষিপ্ত হন এসপি ও ওসি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করে ফরিদুলের স্ত্রী হাসিনা মোস্তফা বলেন, স্বামীকে জামিনে মুক্ত করতে নিজের বাড়িঘর-জমিজমা সর্বস্ব বিক্রি করে দিয়েছি। এখন নিঃস্ব হয়ে আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছি আমি ও আমাদের ২ ছেলে এবং এক মেয়ে। প্রধানমন্ত্রী আপনি ছাড়া আমাদের রক্ষা করার কেও নেই। আপনি বঙ্গবন্ধু কন্যা আপনিই পারবেন আমাদের রক্ষা করতে।

এলাকাবাসী, সহকর্মী সাংবাদিকদের সূত্রে জানা যায়, কক্সবাজারে ফরিদুল মোস্তফা খান একজন নিরপেক্ষ ও মেধাবী সাংবাদিক হিসাবে সুপরিচিত। কৈশর থেকেই লেখালেখিতে অভ্যস্ত। দৈনিক কক্সবাজারবাণী ও জনতারবাণী ডটকম তার প্রকাশিত পত্রিকা। আজ তিনি ১১ মাস ধরে বিনা দোষে কারাজীবন ভোগ করছেন। কক্সবাজারের এসপি ও টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশের রোষানলে পরে ৬টি মিথ্যা মামলার আসামি। তার জামিন করাতেও ব্যর্থ হয়েছেন পরিবারের লোকজন। ইতিমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে ৩ ছেলে-মেয়ের পড়ালেখা। স্ত্রী, ৩ সন্তান ও বৃদ্ধ মায়ের চরম অভাব অনটনে দিন কাটছে।

স্ত্রী হাসিনা মোস্তফা জানালেন, তার স্বামী সত্য ও বস্তুনিষ্ট সংবাদ করতেন। এসপি ও ওসি প্রদীপের বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘুষ বাণিজ্য নিয়ে লিখে গেছেন। তাই তাকে পরপর ৬টি মামলা দেয়া হয়েছে। তার স্বামীর চোখে এবং পায়ুপথে গুড়া মরিচ ঢেলে দিয়েছে ওসি প্রদীপ। এতেও ক্ষান্ত হয়নি। বৈদ্যুতিক শর্ট দিয়ে যৌনশক্তি নষ্ট করে দিয়েছে বলে জানা গেছে। অর্থাভাবে কারাগারে ঠিক মতো চিকিৎসা পাচ্ছেন না। একটু দেখা করতে অনেক ভোগান্তি পেতে হয়।

ফরিদুল মোস্তফার মেয়ে সুমাইয়া মোস্তফা খান জানিয়েছে, তাদের পরিবারের কারো বিরুদ্ধে কোন মামলা নেই। তারা কখনো অপরাধে জড়াননি। সংবাদ প্রকাশ করার কারণেই ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন বাবা। ওসি প্রদীপের নির্মম নির্যাতনে বাবার চোখ দুটি অন্ধ হওয়ার উপক্রম, ডান হাত এবং পা ভাঙা, আঙুল থেঁতলানো। ছোট ছেলে সাদেক মোস্তফা জানান, বাবাকে ফিরে পেতে চাই। বাবাকে ছাড়া ঘুম আসে না।

হাসিনা মোস্তফা বলেন, আমার স্বামীকে হয়রানি না করতে হাইকোর্টে রিট করেছিলাম। ঐ রিট আদালতের নির্দেশে পিবিআই তদন্ত করছে। আট মাস ধরে পিবিআই কার্যালয়ে ফাইল পড়ে আছে। ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। এসপি ও ওসি প্রদীপের কারণে আমাদের জীবনে নেমে এসছে অন্ধকার।

scroll to top