আজ ২৭ নভেম্বর শহীদ ডা. মিলন দিবস

Dr.-Milon.jpg

নিজস্ব প্রতিবেদক ।।

আজ ২৭ নভেম্বর ৯০ এর গণঅভ্যূত্থানের মহান শহীদ, জাসদ নেতা, বিএমএ নেতা ডা. শামসুল আলম খান মিলনের ৩০তম হত্যাবার্ষিকী: শহীদ ডা. মিলন দিবস। সামরিক স্বৈরাচার বিরোধী গণআন্দোলনের উত্তাল পর্বে ১৯৯০ সালের ২৭ নভেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় টিএসসি সংলগ্ন রাস্তায় ছাত্র-গণআন্দোলন দমনে এরশাদ স্বৈরাচারের লেলিয়ে দেয়া সন্ত্রাসীবাহিনীর গুলিতে জাসদ নেতা ও তৎকালীন বিএমএর যুগ্ম মহাসচিব ডা. শামসুল আলম খান মিলন শহীদ হন।

ডা. মিলনের শহীদ হবার খবর ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে ছাত্র গণআন্দোলন উত্তাল রূপ ধারণ করে গণঅভ্যূত্থানে পরিণত হয়। এরশাদ সামরিক স্বৈরাচার কারফিউ জারি করে গণঅভ্যূত্থান দমন করার শেষ অপচেষ্টা চালায়। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েট, ঢাকা মেডিকেল কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রী ২৮ নভেম্বর কারফিউ ও সেনাবহিনী-বিডিআর-আর্মড পুলিশের বাঁধা ভেঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নগরীর রাজপথে মিছিল করে। ছাত্র-ছাত্রীদের বাধভাঙ্গা দুঃসাহসিক মিছিলের মধ্য দিয়ে এরশাদ সামরিক স্বৈরাচারের শাসন ও নিয়ন্ত্রণ ভেঙ্গে পড়ে। রাজপথ ছাত্র-জনতার দখলে চলে যায়। ব্যাপক গণঅভ্যূত্থানের সৃষ্টি হয়।

গণঅভ্যূত্থানের কাছে এরশাদ সামরিক স্বৈরাচার পরাজয় স্বীকার করে ৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় পদত্যাগের ঘোষণা দেয় এবং তিন জোটের রূপরেখা অনুযায়ী তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে বাধ্য হয়। ১৯৬৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি গণআন্দোলনের উত্তাল দিনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. শামসুজ্জোহা তৎকালীন ইপিআর বাহিনীর পশ্চিম পাকিস্তানী ক্যাপ্টেনের নির্দেশে গুলি বর্ষনে নিহত হবার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর যেভাবে গণআন্দোলন গণঅভ্যূত্থানে পরিণত হয়ে সামরিক স্বৈরাচার আয়ূব খানের পতন হয়েছিল, ঠিক তেমনই ১৯৯০ সালের ২৭ নভেম্বর ডা. মিলনের আত্মদান গণআন্দোলনকে এরশাদ সামরিক স্বৈরাচার পতনের গণভ্যূত্থানে পরিণত করেছিল।

ডা. মিলন স্কুল জীবন থেকেই জাসদ সমর্থিত ছাত্রলীগ ও জিয়া সামরিক স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে ছাত্রগণআন্দোলনে যুক্ত হন। তিনি জাসদ সমর্থিত ছাত্রলীগের ঢাকা মেডিকেল কলেজ শাখার সভাপতি, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি পেশাগত জীবনে প্রবেশ করার পরও জাসদ রাজনীতির সাথে সক্রীয়ভাবে যুক্ত ছিলেন এবং জাতীয় চিকিৎসক সংসদের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি নিয়মিত বিএমএর নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে বিজয়ী হয়েছেন। মৃত্যুকালে তিনি বিএমএর যুগ্ম মহাসচিব ছিলেন। তিনি সামরিক শাসন বিরোধী গণআন্দোলনের সমান্তরালে গণমূখী স্বাস্থ্যনীতি প্রণয়নের দাবিতে আন্দোলন গড়ে তুলতে ধারাবাহিকভাবে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন।

শহীদ ডা. মিলন দিবস উপলক্ষে জাসদের কর্মসূচি
শহীদ ডা. মিলন দিবস উপলক্ষে জাসদ কেন্দ্রীয় কমিটি এবং জাতীয় যুব জোট, ছাত্রলীগসহ সহযোগী সংগঠনসমূহ আগামীকাল ২৭ নভেম্বর ২০২০ শুক্রবার সকাল ৭:৩০ টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজে শহীদ ডা. মিলনের সমাধি, সকাল ৮:০০ টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় টিএসসি এলাকায় শহীদ ডা. মিলনের স্মৃতি সৌধে পুস্পস্তবক অর্পণ এবং সকাল ৯ টায় শহীদ কর্নেল তাহের মিলনায়তনে শহীদ ডা. মিলনের প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করে শ্রদ্ধা নিবেদন করবে। এছাড়াও ভোর ৬:০০ টায় জাসদ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ।

scroll to top