দলীয় রাজনীতিতে জোর দিচ্ছে আ.লীগ

101945-awl-as.jpg.jpg

স্টাফ রিপোর্টার

সরকার কঠিন সময় পার করছে। দেশে লাখ ছাড়িয়েছে করোনা সংক্রমণের সংখ্যা। প্রতিদিন মৃত্যুর মিছিলে যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন নাম। করোনার এমন পরিস্থিতি মোকাবিলায় হিমশিম খাচ্ছে সরকার। ভাইরাসটি নিয়ন্ত্রণে আনতে সরকারের পাশাপাশি কাজ করছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রতিটি ইউনিটির নেতাকর্মীরা।তারা রাজধানীসহ সারা দেশেই করোনা সতর্কীকরণ কার্যক্রম, খাদ্যসামগ্রী বিতরণ ও কর্মহীন হয়ে পড়া মানুষের মধ্যে ত্রাণ কার্যক্রম চালাচ্ছেন। ফলে বন্ধ দলটির সাংগঠনিক কার্যক্রম। এমন পরিস্থিতিতে মূল দল ও সকল সহযোগী সংগঠনের দলীয় কার্যক্রম গতি ফেরাতে চায় আওয়ামী লীগ। এজন্য করোনার পাশাপাশি দলীয় রাজনীতিতে জোর দিচ্ছে দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা।

একই সাথে দলের অভ্যন্তরে কোথায় কী সমস্যা আছে! কোথায় কার কারণে সরকারের সুনাম নষ্ট হচ্ছে! কেন্দ্রীয়পর্যায় থেকে সব বিষয়ে খোঁজ নেয়া হচ্ছে। দলটির বেশকজন দায়িত্বশীল নেতা আমার সংবাদকে এমনটাই নিশ্চিত করেছেন। জানা যায়, গত মঙ্গলবার বিকালে রাজধানীর ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক অনির্ধারিত বৈঠক করেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা।সেই বৈঠকে দলীয় প্রধানের নির্দেশে দেশব্যাপী বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি জোরদার করতে মূল ও সকল সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বন জানান আওয়ামী লীগ।

এছাড়া দেশব্যাপী চলমান সমস্যা এবং দলীয় কার্যক্রম বাস্তবায়নের কৌশল নির্ধারণের আলাপ-আলোচনা করেন তারা। বৈঠক সূত্রে জানা যায়, বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাস মোকাবিলার পাশাপাশি দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী এবং করোনাকালীন কীভাবে দলীয় নেতাকর্মীদের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডের সাথে সক্রিয় রাখা যায় সে বিষয়েও আলোচনা হয়।আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী আমার সংবাদকে বলেন, আমাদের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে সারা দেশে বৃক্ষরোপণের কর্মসূচি হাতে নিয়েছি। আওয়ামী লীগ ও সকল সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে আমাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম আরও একধাপ এগিয়ে যাবে।

আ.লীগ সূত্রে, মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে বাংলাদেশে বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে সকল সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থগিত করেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসময় তিনি সরকারের পাশাপাশি দলীয় নেতাকর্মীদের করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে জনসচেতনতা ও সহযোগিতামূলক কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশনা দেন।সভানেত্রীর নির্দেশনার পর করোনার শুরু থেকেই দলের পক্ষ থেকে রাজধানীসহ সারা দেশেই করোনা সতর্কীকরণ কার্যক্রম, খাদ্যসামগ্রী ও কর্মহীন হয়ে পড়া মানুষের মধ্যে ত্রাণ কার্যক্রম চালাচ্ছেন ক্ষমতাসীন দলটির নেতাকর্মীরা।

ফলে স্থগিত রয়েছে সাংগঠনিক সকল কার্যক্রম। বিশেষ করে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষকলীগ, শ্রমিক লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করোনায় বন্ধ রয়েছে। যদিও কমিটি ঘোষণা বিলম্ব হওয়া নিয়ে খুব একটা চিন্তিত নয় আওয়ামী লীগ। তারা বলছে, পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনে যত সময় লাগবে। ততবেশি পদপ্রত্যাশীদের সম্পর্কে খোঁজখবর নেয়া সহজ হবে এবং একটি বিতর্কমুক্ত কমিটি গঠন করা যাবে।

এছাড়া করোনায় বন্ধ মেয়াদোত্তীর্ণ জেলা-উপজেলা সম্মেলন, নতুন সদস্য সংগ্রহ, তৃণমূলে সৃষ্ট এমপি বলয় ভাঙা, ভাইলীগ ভাঙা, অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিরসন, মূল দল ও সহযোগী সংগঠনের অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করাসহ নানামুখী পরিকল্পনা। বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত স্থবির হওয়া ওইসব কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু না করলেও সাংগঠনিক তৎপরতা বৃদ্ধি করতে চায় আওয়ামী লীগ। বিশেষ করে দুর্যোগকালে যাদের কারণে দল ও সরকারের অর্জন ম্লান হচ্ছে। তাদের গতিবিধি নজরে রাখছে দলটি। এজন্য জেলা উপজেলায় দায়িত্বশীল নেতাকর্মীদের মোবাইল ফোনে দিকনির্দেশনা দেয়া হচ্ছে।

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের দলীয়  এক নেতা বলেন, করোনা মোকাবিলায় আওয়ামী লীগের সকল নেতাকর্মী ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করছেন। প্রতিটি নেতাকর্মী যেন স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মেনে দেশ ও দেশের মানুষের পাশে থাকেন সে বিষয়েও খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে। একই সাথে দলের অভ্যন্তরে কোথায় কী সমস্যা আছে! কোথায় কার কারণে দলের সুনাম নষ্ট হচ্ছে! কারা কারা দলের মধ্য অনুপ্রবেশ করেছেন! সব বিষয়ে খোঁজ নেয়া হচ্ছে। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আফম বাহাউদ্দীন নাছিম আমার সংবাদকে বলেন, করোনা সংক্রমণের কথা বিবেচনা করে এবং জনসমাগম এড়াতে মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটিগুলোর সম্মেলন করা হচ্ছে না।
কিন্তু পদপ্রত্যাশীদের বিষয়ে আমরা মনিটরিং করছি। তিনি আরও বলেন, করোনা মোকাবিলা করার পাশাপাশি দলীয় নেতাকর্মীদের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডের সাথে সক্রিয় রাখতে বৃক্ষরোপণের মতো আরও অনেক পদক্ষেপ নেয়া হবে।

scroll to top