কোম্পানীগঞ্জ প্রতিনিধি ::
নোয়াখালী কোম্পানীগঞ্জে বিএনপির অবৈধ কমিটি (অননুমোদিত) ব্যারিস্টার মওদুদের বাড়ীতে সংবাদ সম্মেলন করেছে। বৃহস্পতিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১টায় উপজেলার মানিকপুরস্থ ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের গ্রামের বাড়ীতে এ সংবাদ সম্মেলন করে।
সংবাদ সম্মেলনে ও যৌথ সভায় টেলিফোনে অংশ নেন কোম্পানীগঞ্জের মানুষের অতি আপনজন লম্বা সময়ের দাপটের রাজনীতিবিদ নোয়াখালী-৫ আসনের ৫ বারের সংসদ সদস্য ও এরশাদ সরকরের সাবেক প্রধানমন্ত্রী-উপরাষ্ট্রপতি ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ।
মোবাইলে প্রদত্ত বক্তব্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও উপরাষ্ট্রপতি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, দুর্নীতির মহাদুর্যোগে সরকারের পতন অবশ্যম্ভাবী, দুর্নীতির মহাদুর্যোগে আছে আওয়ামী লীগ সরকার। মামলা-হামলা, অত্যাচার নির্যাতন করে বেশি দিন ক্ষমতায় টিকে থাকা যায় না। এ সরকারের পতনও অবশ্যম্ভাবী।
ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, দেশে যে দুর্যোগ চলছে, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, সর্বত্র দুর্নীতির মহা উৎসব চলছে এতে জনগণ কঠিন সময় পার করছে। এ সরকার শেষ সরকার নয়, লাগামহীন দুর্নীতির কারণে এ সরকারের পতনও সময়ের ব্যাপার। এজন্য দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে জনগণের পাশে থেকে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনের লক্ষ্য ছিলো কোম্পানীগঞ্জ উপজলা বিএনপর সেক্রেটারী নূরুল আলম সিকদার বিগত কিছুদিন সক্রিয়ভাবে দলের কাজে ব্যস্ত এবং দলকে ঐক্যবদ্ধ করেছেন গণতান্ত্রিকভাবে মাঠনেতাদের অংশ গ্রহনে উপজেলা সকল শাখা কমিটি গঠনের দাবিতে। সিকদারের দাবির পক্ষে মাঠে জোরালো অবস্থানও রয়েছে।
মূলত সিকদার তথা ফখরুলপন্থীদের ঠেকাতে অননুমোদিত কমিটি আহ্বান করছেন, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপি’র তৃণমূল নেতা-কর্মীদের বিভ্রান্ত না হয়ে ব্যারিস্টার মওদুদের আহমদ’র নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ থাকার লক্ষ্যে সংবাদ সম্মেলন করেছে উপজেলা বিএনপি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে উপজেলা বিএনপি’র সহ-সভাপতি হাফেজ আবদুল হক শাহজাহান বলেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড বিএনপি’র নেতৃবৃন্দের সাথে আলাপ আলোচনা করে যে কমিটি দিয়েছে আমরা সকলে ঐ কমিটির নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ আছি এবং দলীয় কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছি। কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা ও বসুরহাট পৌরসভা বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবকদল, ছাত্রদল’র কমিটি গঠনের পর আমরা প্রত্যেকটি ইউনিয়নে দলের সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করছি।
মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল আলম সিকদার তার দায়িত্বে থাকাকালীন সময় থেকে দলের সভাপতির সাথে গ্রুপিং করে প্রথম থেকে দলের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করে দলের কর্মকান্ডকে স্থবির করে আসছে। সে ব্যক্তি সুবিধা হাসিল করার জন্য বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে সরকার দলের সাথে আতাত করে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের সময় ব্যক্তিগত সুবিধা হাসিল করে দীর্ঘসময় ধরে দায়িত্ব পালন করলেও আনুষ্ঠানিকভাবে একটি বর্ধিত সভা করতেও ব্যর্থ হয়। সর্বশেষ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় সে রহস্যজনক ভূমিকা পালন করে। নির্বাচনের আগ থেকে এবং অদ্যাবধি দলের সভাপতির কোন খোঁজ খবর না থাকায় কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপি’র নেতৃত্ব শূন্যতা দেখা দেয়ায় নির্বাচনের ৭/৮মাস পরে ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড বিএনপি’র কাউন্সিলদের সাথে করে আলাপ করে ব্যারিস্টার মওদুদ বর্তমান কমিটি ঘোষণা করেন। আমরা তাঁর নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ আছি এবং থাকবো। এ কমিটির বাহিরে অন্যকোন কমিটি নাই।
অপরদিকে নুরুল আলম সিকদার’র সাথে যোগাযোগ করলে তিনি নিজেকে উপজেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক দাবী করে বলেন, আমি দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী জেলা বিএনপি’র অনুমোদিত উপজেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক। কিন্তু বসুরহাট পৌরসভা বিএনপি’র নেতৃবৃন্দ দলের গঠনতন্ত্র বহিঃর্ভূতভাবে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ কর্তৃক অগণতান্ত্রিকভাবে কমিটি দাবী করে দলের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করে তৃণমূল নেতাকর্মীদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের ব্যক্তিগত প্যাডে ঘোষিত উপজেলা বিএনপির কমিটির (অননুমোদিত) সভাপতি কামাল উদ্দিন চৌধুরী, সহ-সভাপতি নুরুল আমিন, আবদুল মতিন তোতা, সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান রিপন, সাংগঠনিক সম্পাদক মানছুরুল হক বাবর, শওকত হোসেন সগির, পৌরসভা বিএনপি’র সভাপতি আবদুল মতিন লিটন, সাংগঠনিক সম্পাদক ওমর ফারুক, উপজেলা যুবদল সভাপতি ফজলুল কবির ফয়সাল, সাধারণ সম্পাদক জাহেদুর রহমান রাজন, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দল সভাপতি সামছুদ্দিন হায়দার, সাধারণ সম্পাদক সামছুল হক রিপুল, পৌরসভা যুবদল সভাপতি জাহেদুল হক রাফেল, সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল হক তৌহিদ, উপজেলা ছাত্রদল সভাপতি আতায়োর হোসেন পাভেল, সাধারণ সম্পাদক আরিফুল হক আরিফ প্রমুখ। তবে এসব পদ পদবীর নেতারা কেউই বৈধ নয়। কারন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের প্রদত্ত কোন কমিটিই ১০ মাসেও জেলা বা কেন্দ্র অনুমোদন দেননি।