মোহাম্মদ ছানা উল্যাহ :
নোয়াখালীর সুবর্ণচরের ১ নং চরজব্বার ইউনিয়নে পশ্চিম চর জব্বার গ্রামে আবদুল মান্নান (৬০ ) নামের এককৃষককে কুপিয়ে হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা । ওই সময় সন্ত্রাসীদের হামলায় আরো ৩ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় ইউপি সদস্য বাহারসহ ৩ জনকে আটক করেছে চর জব্বর থানা পুলিশ । ৫ আগস্ট বুধবার রাতে উপজেলার চর জব্বার ইউনিয়নের কাঞ্চন বাজারে এ ঘটনা ঘটে ।
নিহত কৃষক আবদুল মান্নান চর জব্বার ইউনিয়নের পশ্চিম চরজব্বার গ্রামের মজিবুল হকের ছেলে । আহতরা হলেন একই গ্রামের নুর আলমের ছেলে পল্লী চিকিৎসক আবুল কাশেম (৩০) মোঃ রাসেল (২২) ও জয়নাল আবেদীনের ছেলে হেলাল উদ্দিন (৩৬) ।
স্থানীয়রা জানায়, স্থানীয় কৃষক আবদুল মান্নানকে বয়স্ক ভাতার কার্ড দেওয়ার জন্য ঘুষ নিয়ে এক বছর পেরিয়ে গেলেও কার্ড না দেওয়ায় স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার বাহার উদ্দিনকে কার্ডের ব্যাপারে জানতে চাইলে বাহারের লোকজন কৃষকের উপর হামলা করে পরে থানা পুলিশ ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গেও হস্তক্ষেপে মিমাংসা হয়। কিন্তু বাহার মেম্বারের লোকজন গ্রাম্য সালিশের বিরোধিতা করে এর জের ধরে এই ঘটনা ঘটায়।
নিহতের পরিবার ও আত্মীয় স্বজনের আহাজারী
নিহতের ছোট ভাই আ‘লীগ নেতা সফিকুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, মহামারী করোনা ভাইরাসের মাঝামাঝি সময়ে চরজব্বার ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য বাহার উদ্দিন বৃদ্ধ মফিজুর রহমানকে বয়স্ক ভাতা দেওয়ার নাম করে তার কাছ থেকে এক হাজার টাকা ঘুষ নেয় ,এর কিছুদিন পর ওই বৃদ্ধা ইউপি সদস্য বাহার উদ্দিনকে ভাতা অথবা ঘুষের টাকা ফেরৎ দেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করলে বাহার বৃদ্ধাকে মারধর করে । ওই ঘটনায় আমার চাচাতো ভাই যুবলীগ কর্মী মন্জু প্রতিবাদ করলে বাহারের ছেলে বেন্ডা ও স্থানীয় মজিবুল হক মাঝির ছেলে ইসমাইলের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী তাকে পিটিয়ে আহত করে । ওই ঘটনায় গত ১০ এপ্রিল মন্জু বাদী হয়ে চরজব্বর থানায় মামলা দায়ের করেন । এর জের ধরে বুধবার রাতে স্থানীয় কাঞ্চনবাজার ইউপি সদস্য বাহার উদ্দিন ও মজিবুল হক মাঝির ছেলে ফজলুল হক ফজলুর নেতৃত্বে ইসমাইল হোসেন,আনিছ,আবুল কালাম, আবদুল আলী, আজাদ হোসেনসহ ১৫/২০ জনের সঙ্গবদ্ধ সন্ত্রাসী মন্জুকে না পেয়ে বাজারে পাকাগুলি ছুঁড়ে আমার ভাই আবদুল মান্নান ও আমাদের আতœীয়-স্বজনের উপর হামলা চালিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে একাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে লুট-পাট করে চলে যায় । পরে স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় গুরুত্বর আহত আবদুল মান্নান,আবুল কাশেম, মোঃ রাসেল ও হেলাল উদ্দিনকে উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করলে কর্তব্যরত চিকিৎসক কৃষক আবদুল মান্নারকে মৃত ঘোষণা করেন । আবদুল মান্নানের মৃত্যুর খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে কাঞ্চনবাজারের ব্যবসায়ীরা হত্যাকারী বাহার মেম্বার ও ফজলুল হক মোহরার ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেন ।
কৃষক আবদুল মান্নানের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার সৈয়দ মহিউদ্দিন আবদুল আজিম । তিনি বলেন, আহত ৩ জনকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে ।
চরজব্বার থানা অফিসার ইনচার্জ ( ওসি) সাহেদ উদ্দিন জানান , সংঘর্ষে একজনের মৃত্যুর ঘটনায় স্থানীয় ইউপি সদস্য বাহার উদ্দিনসহ ৩ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে । অভিযোগ পেলে এ ঘটনায় প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে । পরিস্থিতি ্এখন শান্ত রয়েছে। ঘটনাস্থলে টহল পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
